সংকেত অমান্য করে পালানোর চেষ্টা করা একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিয়ে থামাতে গিয়েছিলেন সড়কে দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য। এতে মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশে থাকা অন্য এক পুলিশ সদস্যকে গিয়ে ধাক্কা দিলে তিনি ধীরগতির একটি ট্রাকের নিচে চাপা পড়েন। এতে থেঁতলে যায় ওই পুলিশ সদস্যের ডান পা। পরে হাসপাতালে তাঁর পা কেটে ফেলতে হয়।
গতকাল রোববার সকাল পৌনে ছয়টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া উপজেলা অংশের চুনতির হাজী রাস্তার মাথা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ করা এ ঘটনার ৫৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের একটি অস্থায়ী তল্লাশিচৌকিতে কক্সবাজার থেকে লোহাগাড়ার দিকে আসা দুটি মোটরসাইকেলকে থামার সংকেত দেয় পুলিশ। সামনের মোটরসাইকেলটি সংকেত অমান্য করে দ্রুত পালিয়ে যায়। পেছনের মোটরসাইকেলটি মহাসড়কের পশ্চিম পাশে প্রথমে থামে। পরে সুযোগ বুঝে হঠাৎ দ্রুতগতিতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে দায়িত্বরত একজন পুলিশ সদস্য পেছন থেকে মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেন। এতে দুই আরোহীসহ মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আরেক পুলিশ সদস্যকে ধাক্কা দিলে তাঁর ডান পা চট্টগ্রামগামী ধীরগতির একটি ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে।
লোহাগাড়া থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আহত পুলিশ সদস্যের নাম আলা উদ্দিন (৩৩)। তিনি লোহাগাড়া থানার দায়িত্বরত কনস্টেবল। তাঁর বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে ওই পুলিশ সদস্যের ডান পা থেঁতলে যায়। পরে তাঁকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁর ডান পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ কেটে বিচ্ছিন্ন করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন।
লোহাগাড়া থানার দায়িত্বরত উপপরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী, ট্রাকের চালক, তাঁর সহকারীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের নামে সড়ক দুর্ঘটনা আইনে মামলা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে তাঁদের চট্টগ্রাম আদালতে পাঠানো হয়েছে। মোটরসাইকেল ও ট্রাক থানা হেফাজতে আছে।
গতকাল সকাল থেকেই ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অনেকে এ ভিডিও শেয়ার করেছেন। অনেকে পুলিশের কর্মকাণ্ডের সমালোচনাও করেছেন। তাসনীম হাসান নামের এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘এক পুলিশ সদস্য মোটরবাইকটা আটকাতে যেভাবে ধাক্কা দিলেন, একই উদ্দেশ্যে অন্য পাশ থেকে দৌড়ে আসা পুলিশ ওই জায়গায় না থাকলে তো দুই বাইক আরোহীই ট্রাকের চাকার নিচে পড়তেন! নিয়ম মানাতে গিয়ে এই পুলিশ সদস্যরা তো দেখছি জীবন নেবেন না শুধু, দেবেনও।’
মো. গিয়াস নামের আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘এ ঘটনা দেখিয়ে দেয়—দেশের পুলিশ বাহিনীতে শৃঙ্খলা সংবেদনশীলতা ও প্রশিক্ষণের ঘাটতি এখনো কতটা বিদ্যমান।’